হলিউডের সেরা পাঁচ অভিনেতা

লেখক : রোহান অর্পণ – চলচিত্রের প্রাণকেন্দ্র হলো হলিউড। যারা জীবনে সিনেমা দেখেনি তারাও একবার হলেও হলিউডের নাম শুনেছে।

হলিউড ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস এঞ্জেলেস শহরের একটি এলাকা। বিশ্বমাতানো আন্তর্জাতিক সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি নামেও পরিচিত। সেই হলিউড ইন্ডাস্ট্রির সেরা পাঁচ বাঘা বাঘা অভিনেতাদের নিয়েই আজকের টপ ফাইভের আর্টিকেল।

১. জন জোসেফ “জ্যাক” নিকোলসন : মার্কিন চলচিত্র ও হলিউড ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম শক্তিশালী অভিনেতার নাম জ্যাক নিকোলসন। যার জন্ম ২২ এপ্রিল ১৯৩৭। নিউরোটিক চরিত্রগুলোকে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলার জন্য তিনি বিশ্বব্যাপী পরিচিতি লাভ করেছেন। অস্কার মনোনয়নের খাতায় ১২ বার নাম লিখিয়েছেন তিনি। এর মধ্যে পুরস্কার পেয়েছেন তিন বার। দুই বার সেরা অভিনেতা এবং এক বার সেরা পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে রয়েছে ইজি রাইডার, ফাইভ ইজি পিসেস, চায়নাটাউন, ওয়ান ফ্লু ওভার দ্য কাকুস নেস্ট, দ্য প্যাসেঞ্জার, দ্য শাইনিং, টার্মস অফ এন্ডিউরমেন্ট, ব্যাটম্যান, আ ফিউ গুড মেন, অ্যাজ গুড অ্যাজ ইট গেট্‌স, অ্যাবাউট শ্মিট, সামথিংস গটা গিভ এবং দ্য ডিপার্টেড।

২. টম হার্ডি : সকলে টম হার্ডি নামে চিনলেও তার প্রকৃত নাম এডওয়ার্ড টমাস হার্ডি। তিনি ইংরেজ অভিনেতা এবং প্রযোজক। ব্রিটিশ ও আমেরিকান উভয় পর্যায়েই তিনি অভিনয় করেছেন।২০০৩ সালে ‘ইন আরাবিয়া উই উড অল বি কিংস’ ড্রামার জন্য তিনি সর্বাধিক প্রতিশ্রুত নব অভিনেতা হিসেবে লর‍্যান্স অলিভিয়ার এওয়ার্ডে মনোনয়ন পান। শুধু তাই নয়, উক্ত ড্রামাটিতে এবং ব্লাড চলচিত্রে লুকা ক্যারেক্টারের জন্য একই সালে আউটস্ট্যান্ডিং নিউকামার হিসেবে পুরষ্কিত হন। ১৯৭৭ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহন করেন তিনি। হলিউডের বিখ্যাত পরিচালক ক্রিস্টোফার নোলানের তিন টি চলচিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। টম হার্ডির উল্লেখযোগ্য চলচিত্র গুলো হলো ম্যাডম্যাক্স, ডার্ক নাইট রাইজেস, ইনসেপশন, ভেনম ( আসছে), ওয়ারিওর ইত্যাদি।

৩. মর্গান ফ্রিম্যান : মরগ্যান পোর্টারফিল্ড ফ্রিম্যান, একজন মার্কিন অভিনেতা। শুধু তাই নয় একাধারে চলচিত্র পরিচালক, নির্দেশক ও সুবক্তা হিসেবেও খ্যাতির খাতায় নাম লিখিয়েছেন তিনি। আফ্রিকান বংশোদ্ভুত এ অভিনেতা জন্মগ্রহণ করেন আমেরিকার টেনেসির মেম্ফিসে। জন্ম ১৯৩৭ সালের জুলাই মাসের এক তারিখে। ৮১ বছর বয়সী এই প্রবীণ অভিনেতা হলিউডে নাম কামিয়েছেন ৯০ দশকের শুরুর দিকে। তবে টেলভিশনের পর্দায় তাকে প্রথম দেখা যায় ১৯৭১ সনে। তাঁর সংরক্ষণমূলক মনোভাব, ও আচার-আচরণ, এবং কতৃত্বমূলক কণ্ঠ ও বাচনভঙ্গির জন্য তিনি বেশি পরিচিত। ২০০৫ সালে মিলিয়ন ডলার বেবি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য মরগান ফ্রিমান সেরা পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া এর আগে তিনি স্ট্রিট স্মার্ট, ড্রাইভিং মিস ডেইজি, এবং দ্য শশ্যাঙ্ক রিডেম্পশন-এর জন্য অ্যাকাডেমি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন লাভ করেছেন। তার উল্লেখযোগ্য চলচিত্র গুলো হলো আনফরগিভেন, সেভেন, ডিপ ইমপ্যাক্ট, দ্য সাম অফ অল ফিয়ারস, ব্রুস অলমাইটি, ব্যাটম্যান বিগিন্স, দ্য বাকেট লিস্ট, এভান অলমাইটি, ওয়ান্টেড, এবং দ্য ডার্ক নাইট ।

৪. লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও : লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও ১৯৭৪ সালের ১১ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার হলিউডে জন্মগ্রহণ করেন। অদ্ভুত হলেও সত্যি এই শক্তিশালী অভিনেতার নামকরণ করা হয় মহান শিল্পী লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চির নাম থেকে। লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিওর নামকরণ সম্পর্কে বলা হয় যে তার মা যখন গর্ভবতী ছিলেন তিনি ইতালিতে একটি জাদুঘরে লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির ছবি দেখতেছিলেন। সেসময়ে তিনি প্রথম পেটে সন্তানের নড়াচড়া টের পান। পাঁচ বছর বয়স থাকতে ছোট্ট ক্যাপ্রিওর ক্যারিয়ার শুরু হয় একটি বিজ্ঞানপনে অভিনয় করে। সেই বিজ্ঞাপনের ক্যাপ্রিওই আজ টাইটানিক মুভির জন্য মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নেয়। বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পান টাইটানিক ছবিতে জ্যাক ডসন চরিত্রে অভিনয়ের জন্য। বহু পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন লাভ করার পাশাপাশি একবার একাডেমি পুরস্কার ও তিনবার গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার লাভ করেন। ব্লাড ডায়মন্ড চলচিত্রের জন্য ২০০৬ সালে তিনি অস্কারে মনোনয়ন পান। ২০১৬ সালে দ্য রেভেনেন্ট চলচিত্রের জন্য একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। তার উল্লেখযোগ্য চলচিত্র গুলো হলো টাইটানিক, ক্যাচ মি ইফ ইউ ক্যান,দ্য ডিপার্টেড,ব্লাড ডায়মন্ড, শাটার আইল্যান্ড, ইনসেপশন,দ্য রেভেনেন্ট ইত্যাদি।

৫. জনি ডেপ : জ্যাক স্প্যারোর কথা মনে আছে কার কার? ঐ যে সেই জলদস্যু ক্যাপ্টেন! হ্যা জনি ডেপের কথা বলছি। যিনি এই অসাধারণ একটি চরিত্রে নিজেকে ফুটিয়ে তুলেছেন। তিনি নিঃসন্দেহে বর্তমান কালের অনন্য প্রতিভাধর অভিনেতা। জনি ডেপের জন্ম ১৯৬৩ সালের ৯ই জুন। উত্তর আমেরিকার কেনটাকি প্রদেশে। চার ভাইবোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। এই অভিনেতার বাল্যকাল কেটেছে ২০ টি শহরে। পারিবারিক শৃংখলার অভাবে শৈশবে মাদকাশক্তি তে জড়িয়ে পড়েন। রক স্টার হওয়ার ইচ্ছা থাকার কারণে ডেপ অল্প বয়সে স্কুলে যাওয়া ছেড়ে দেন। বিশ্বের অন্যতম সর্বোচ্চ আয়ের অভিনেতা হওয়া সত্ত্বেও দুর্ভাগ্যবশত তার কপালে অস্কার জুটেনি। ১৯৮০’র দশকের টিভি সিরিজ ২১ জাম্প স্ট্রিটের মাধ্যমে ডেপ তার অভিনয় জীবন শুরু করেন।তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার এবং স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড পুরস্কার জিতেছেন। তার উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলো হলো: দ্য পাইরেটস অফ দ্য ক্যারিবিয়ান সিরিজ, এডওয়ার্ড সিজরহ্যান্ডস, ফাইন্ডিং নেভারল্যান্ড, ব্ল্যাক ম্যাস, ট্রানসেন্ডেন্স, সুইনি টড: দ্য ডিমন বার্বার অফ ফ্লিট স্ট্রিট, স্লিপি হলো, ব্লো, দ্য নাইন্থ গেইট, ডার্ক শ্যাডো দ্য লোন রেঞ্জার, এলিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড, চার্লি অ্যান্ড দ্য চকোলেট ফ্যাক্টরি, দ্য টুরিস্ট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*