অধিপরামর্শ ফোরাম

অধিপরামর্শ ফোরাম কর্তৃক সাইক্লোন আম্ফান উপদ্রুত এলাকা পরিদর্শন শেষে সংবাদ সম্মেলন

নারায়ণগঞ্জ বাণী২৪.কমঃ সাইক্লোন আম্ফনান উদ্রত এলাকা পরিদর্শন শেষে ”অধিপরামর্শ ফোরাম” সংবাদ সংম্মেলন করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে উপকূলীয় এলাকা নিরাপত্বার জন্য পরার্মশ  প্রদান করা হয়।

৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বিকাল ৫:০০ টায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে   শ্যামনগর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে এ সংবাদ সম্মেলন করেন।



এর আগে সকাল ১০:০০ থেকে লিডার্স এর সহযোগিতায় সাতক্ষীরা জেলা জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরাম ও শ্যামনগর উপজেলা জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরাম সাইক্লোন আম্ফান উপদ্রুত এলাকা পরিদর্শন করেন।

সংবাদ সম্মেলেনে  বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তন, ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগ, সুপেয় পানির সংকট, লবনাক্ততা প্রভৃতির কারনে উপকূলীয় এলাকা বসবাসের অনুপযোগী হয়ে উঠেছে। টেকসই বাঁধ না থাকায় প্রতি বছর কোন না কোন সময়, কোন না কোন উপকূলীয় এলাকায় বাঁধ ভেঙ্গে নদীর পানিতে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে।


পরিকল্পনা হয়, বাজেট হয়, কিন্তু হয় না স্থায়ী শক্তিশালী বেড়িবাঁধ। বিগত বছরগুলোতে উচ্চ জোয়ারের চাপ ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে তেমন দেখা না গেলেও সম্প্রতি মার্চ মাসে উচ্চ জোয়ারের প্রভাবে দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোনা পানিতে মানুষের জীবন-জীবিকা, সম্পদ, খাদ্য, পানি, বাসস্থানসহ অন্যান্য সংকট সৃষ্টি করেছে।

এই সংকট নিরসন না হতেই সামনে আসছে বর্ষা মৌসুম, এ সময়ে নদীর খর স্রোতে ও উচ্চ জোয়ারের কারনে বেড়িবাঁধ ভেঙে আবারও প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।

সভাপতি মহোদয় বলেন,“দেশের মানুষ যখন বিভিন্ন আনন্দ উল্লাসে মেতে থাকে, তখন উপকূলের মানুষ ভয়ে থাকে কখন বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি প্রবেশ করবে। উপকূলের মানুষের একান্ত দাবী টেকসই বেড়িবাঁধ দিয়ে তাদের রক্ষা করা হোক।

” পরবর্তীতে অধিপরামর্শ ফোরামের পক্ষে নিম্মের সুনির্দ্দিষ্ট দাবীসমূহ তুলে ধরা হয়-

১. দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় এলাকাকে দুর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করা।

২. উপকূল উন্নয়ন বোর্ড গঠন করতে হবে।

৩. জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগকে মাথায় রেখে স্থায়ী ও মজবুত বেড়িবাঁধ পুন:নির্মান করতে হবে।

৪. জনসংখ্যার অনুপাতে পর্যাপ্ত সাইক্লোন শেল্টার সহ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।

৫. বাঁধ রক্ষণাবেক্ষনের জন্য জরুরী তহবিল গঠন ও বাঁধ ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় সরকারকে সম্পৃক্ত করতে হবে।

৬. উপক‚লীয় সকল মানুষের খাবার পানির টেকসই ও স্থায়ী সমাধান করতে হবে।

৭. জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বিশ্ব জলবায়ু তহবিল থেকে যে অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়, তার সর্বোচ্চ ব্যবহারে নিশ্চিত করতে হবে।

৮. দুর্যোগ প্রবণ দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূল, চর ও দ্বীপাঞ্চলবাসীর জানমাল সুরক্ষায় কার্যকর অবকাঠামো সুবিধা গড়ে তুলতে হবে।

৯. ঝড়-ঝঞ্ঝা, নদীভাঙ্গন ও ভূমিক্ষয় ঠেকাতে উপকূল, দ্বীপ ও চরাঞ্চলে ব্যাপকহারে বৃক্ষরোপন কর্মসূচি গ্রহণ এবং প্যারাবন বা সবুজ বেষ্টনী গড়ে তুলতে হবে।

১০. সুন্দরবন রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

উক্ত সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন শ্যামনগর উপজেলা জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরামের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাষ্টার নজরুল ইসলাম।


আরও উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা জেলা জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরামের সদস্য সচিব মাধব চন্দ্র দত্ত, ফোরামের সদস্য ও সাতক্ষীরা নাগরিক কমিটির আহবায়ক মোঃ আনিছুর রহিম, ফোরামের সদস্য নিত্যানন্দ সরকার, শ্যামনগর উপজেলা অধিপরামর্শ ফোরামের সদস্য রনজিৎ বর্মন, অধিপরামর্শ সম্পাদক এ্যাড.স্বপন কুমার মন্ডল ও শ্যামনগর উপজেলা প্রেসক্লাব, রিপোটার্স ক্লাব, অনলাইন নিউজ ক্লাব এবং সুন্দরবন প্রেস ক্লাবের সাংবাদিক প্রতিনিধিবৃন্দ ও লিডার্স এর নির্বাহী পরিচালক মোহন কুমার মন্ডল সহ আরও আনেকে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*