নারায়ণগঞ্জ বাণী নিউজঃ সাধারণত এনেস্থেসিয়া এবং নিদ্রাহীনতায় ঘুমের ওষুধ ব্যবহার করা হয়। তবে অপ্রয়োজনে ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ব্যতীত ঘুমের ওষুধের ব্যবহার ক্ষতিকর।
ঘুমের ওষুধের ক্ষতিকর প্রভাবসমূহ:
১) লম্বা সময় ধরে নিয়মিত ঘুমের ওষুধ ব্যবহার করলে ঘুমের ওষুধের প্রতি আসক্তি তৈরি হয়। পরে সময়মতো ঘুমের ওষুধ গ্রহণ না করলে বা গ্রহণ না করতে চাইলে উইথড্রোয়াল সিমটোম দেখা যায়। এ কারণে অস্থিরতা এবং অনিদ্রা রোগ থেকে খিঁচুনি ও মৃত্যু পর্যন্ত্ম হতে পারে।
২) অ্যালকোহল বা মদে আসক্ত ব্যক্তিরা নিয়ম বহির্ভূতভাবে ঘুমের ওষুধ সেবন করলে আকস্মিক মৃত্যু ঘটতে পারে।
৩)ঘুমের ওষুধের ক্ষেত্রে এমনটিও পরিলক্ষিত হয়েছে যে যেই রোগ কমানোর জন্য ওষুধ দেওয়া হয়েছে, তা ওষুধ খাবার পর আরও বেড়ে গেছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এই সমস্যাটিকে বলা হয় ‘প্যারাডক্সিক্যাল রিঅ্যাকশন’।
৪) অনেক ঘুমের ওষুধ নিয়মবহির্ভূতভাবে দীর্ঘদিন যাবৎ অত্যধিক ব্যবহার করলে স্মৃতিবিলোপ ঘটতে পারে।
৫) লম্বা সময় ধরে ঘুমের ওষুধ ব্যবহার করলে একসময় ঐ একই ডোজ আর একই কার্যক্ষমতা দেখাতে পারে না। তখন ওষুধের কাক্সিক্ষত কার্যক্ষমতা পেতে হলে ডোজ বৃদ্ধি করতে হয়। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় এই বিষয়টিকে বলা হয় ‘ড্রাগ টলারেন্স’। ঘুমের ওষুধের ডোজ বা মাত্রা ইচ্ছামতো বাড়ালে মৃত্যু পর্যন্ত্ম হতে পারে।
৬) রাতে ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমালে পরের দিন ঘুমঘুম ভাব থেকে যায়। এ সমস্যাটি গাড়িচালক ও সম্পর্কিত পেশাজীবীদের ক্ষেত্রে বিপজ্জনক।
৭) ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমালে (বিশেষত আধা-চেতনার ক্ষেত্রে) অনেকের মধ্যে অস্বাভাবিক নড়াচড়া, আচরণ, আবেগ, উপলব্ধি ও স্বপ্ন পরিলক্ষিত হয়। হয়তো ঘুম থেকে জেগে রোগী এসব মনে করতে পারবেন না। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এই বিষয়টিকে বলা হয় ‘প্যারাসোমনিয়া’।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির ঘুমবিষয়ক গবেষক শন ইউংস্টেইট মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম সিএনএন এর কাছে দাবি করেন ‘ঘুমের ওষুধ খুবই ক্ষতিকর। ইহা দৈনিক এক প্যাকেট সিগারেট ধূমপানের সমান ক্ষতিকর’।
নির্দিষ্ট রোগের ক্ষেত্রে ঘুমের ওষুধ খুবই প্রয়োজনীয় একটি চিকিৎসা পদ্ধতি। নিবন্ধিত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া ঘুমের ওষুধ ক্রয়, বিক্রয় ও সেবন করা ঝুঁকিপূর্ণ।