যে সব কারণে রোজা ভাঙে না এমন কিছু কাজ আছে যা হয়ে গেলে রোজা ভেঙেছে বলে সন্দেহ হয় । অথচ রোজা ভাঙে না, সে সমস্ত বিষয়াদিও মোটামুটি জেনে রাখা উচিত যাতে অযথা সন্দেহ থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখা যায়।
এ সম্পর্কে জেনে রাখা প্রয়োজন যে,
১.কারো কারো ঘুমন্ত অবস্থায় মুখ থেকে লালা গড়িয়ে পড়ে। আবার টান দিলে বাইরের গড়িয়ে পড়া লালা মুখে চলে আসে। কোনো ঘুমন্ত রোজাদার ব্যক্তি যদি ঘুমন্ত অবস্থায় বা ঘুম থেকে জেগে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে লালা টান দিয়ে নিয়ে গিলে ফেলে তবে রোজা ভঙ্গ হবে না।
২. মুখের থুথু যত বেশী হোকনা কেনো গিলে ফেললে রোজা ভাঙে না।
৩. ঘুমন্ত রোজাদার ব্যক্তি স্বপ্নে কিছু খেলে তার রোজা ভাঙবে না।
৪. রোজা অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলেও রোজা ভাঙবে না।
৫. আপনাআপনি যদি হুলকুমের মধ্যে মাছি, ধোঁয়া বা ধূলা চলে যায় তবে রোজা ভাঙবে না।
৬. রোজা রেখে সুরমা ব্যবহার করা, তেল লাগানো অথবা আতর সুগন্ধি ইত্যাদির সুঘ্রাণ গ্রহণ করাতে কোনো দোষ নেই । চোখে সুরমা লাগালে
প্রতিক্রিয়াস্বরূপ যদি থুথু বা শ্লেষ্মায় সুরমার রঙ দেখা যায় তবুও রোজা ভঙ্গ হবে না । মকরূহও হবে না।
৭. নাকের শ্লেষ্মা জোরে টানার কারণে যদি হুলকুমে চলে যায় তবে রোজা নষ্ট হবে না।
৮. রাতে সহবাস করলে রাতেই গোসল করে নেয়া উচিত । কেউ যদি ফরজ গোসল না করেও রোজা রাখে তবুও তার রোজা ভঙ্গ হবে না ।
৯. রোজা রেখে দিনের বেলায় স্বামী স্ত্রী এক সঙ্গে শোয়া, হাত লাগানো, আদর করা সবই বৈধ । কিন্তু কামভাব প্রবল হবার আশংকা থাকলে অবৈধ । যে
সমস্ত বৃদ্ধ মনচাঞ্চল্য থেকে মুক্ত তাদের জন্যে দোষণীয় নয় ।
১০. শেষ রাতে সেহেরী খাওয়ার পর কেউ কেউ পান খায় । এরকম অভ্যাস থাকলে ভোর (সোবহে সাদেক) হওয়ার আগেই ভালো করে কুলি করে নেয়া উচিত। উত্তমরূপে কুলি করার পরও যদি সকালে থুথু কিছু লাল দেখায় তবুও রোজা নষ্ট হবে না।
১১. রোজা অবস্থায় ইনজেকশন নিলে রোজা নষ্ট হয় না ।
১২. কোনো জিনিস জিহ্বার অগ্রভাগ দিয়ে স্বাদ গ্রহণ করে ফেলে দিলে রোজা ভাঙেনা । কিন্তু একান্ত প্রয়োজন ব্যতিরেকে এরকম করা মকরূহ। অবশ্য যদি কোনো মহিলার স্বামী এরকম নিষ্ঠুর হয় যে তরকারীতে লবণ একটু কমবেশী হলে অত্যাচার করে তবে সেই মহিলার জন্য তরকারীর লবণ জিহ্বার অগ্রভাগ দিয়ে পরীক্ষা করে নিয়ে, থুথু ফেলে দেয়াতে দোষ নেই।
১৩. রোজা অবস্থায় শিশুদের খাবার বা অন্য কিছু চিবিয়ে দেয়া মকরূহ । অবশ্য পরিস্থিতি যদি এরকম হয় যে শিশুর জীবন বিপন্ন হতে পারে আর চিবিয়ে
দেয়ার কোনো লোক না থাকে তবে রোজাদার ব্যক্তি চিবিয়ে দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে ফেলা বৈধ হবে।
১৪. কাঁচা বা শুকনা মেসওয়াক দ্বারা দাঁত মাজা দোষণীয় নয়। এমন কি কাঁচা মেসওয়াকের তেতো, কষা বা অন্য যে কোনো স্বাদ যদি মুখে অনুভূত হয় তবুও রোজার কোনো ক্ষতি হবে না। মকরূহও হবে না ।
১৫. মাছি বা ঐ জাতীয় কোনো প্রাণী অসতর্কতা বশতঃ গিলে ফেললে রোজা নষ্ট হবে না।
সূত্রঃ মাহে রমজান কিতান-মাওঃমামুনর রশীদ (রঃ)