নারায়ণগঞ্জ বাণী২৪.কমঃ নারায়ণগঞ্জের আলোচিত আওয়ামীলীগ অফিসে বোমা হামলা মামলার পুনরায় তদন্ত দাবী করেছেন মামলার অন্যতম ভিকটিম নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান।
৭ সেপ্টেম্বর সোমবার নারায়ণগঞ্জ আদালতে স্বাক্ষী দিতে এসে তিনি এ দাবী জানান। তাদের আবেদনে সম্মতি জানিয়ে নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শেখ রাজিয়া সুলতানা রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবিকে লিখিত আবেদন করতে বলেন।
সোমবার বিকেল ৩ টায় নারায়ণগঞ্জ আদালত চত্বরে সাংবাদিকদের সাথে ব্রিফিংকালে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান এ তথ্য জানান।
শামীম ওসমান বলেন, আমি বোমা হামলা মামলার প্রধান ভিকটিম। আজকে মামলার স্বাক্ষী দিতে এসে দেখি আমরা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট যেভাবে স্বাক্ষী দিয়েছি তিনি আমাদের বক্তব্য সে ভাবে লিখেননি। তিনি আমাদের বক্তব্য পাল্টিয়ে অন্যভাবে লিপিবদ্ধ করে আদালতে জমা দিয়েছেন। এতে করে অনেক ভাল লোক যারা বোমা হামলার সাথে জড়িত নয় তারা মামলায় আসামী হয়েছেন। আবার অনেকে ঘটনার সহিত জড়িত থেকেও মামলায় আসামী হননি।
অমরা এ বিষয়টি আদালতে উপস্থাপন করে মামলার পুনরায় তদন্ত করার আবেদন করেছি। আদালত আমাদের বক্তব্য শুনে এতে সম্মতি জানিয়ে রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবিকে লিখিত আকারে আদেদন করতে বলেছেণ। শামীম ওসমান আরও বলেন,আমরা চাই যারা সত্যিকার অর্থে এ ঘটনার সাথে জড়িত তারা যেন শাস্তি পায়।
প্রসঙ্গত ২০০১ সালের ১৬ ই জুন রাতে শহরের চাষাড়ায় তৎকালীন আওয়ামীলীগ অফিসে বোমা হামলায় নিহত হয় ২০ নেতা-কর্মী। আহত হয় অনেকে। তখন অল্পের জন্য বেঁচে যান নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান এবং মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা সহ অর্ধ শতাধিক মানুষ।
এদিকে বোমা হামলায় দুই পা হারিয়ে মৃত্যুর কাছাকাছি থেকে ফিরে এসে এখনো কৃত্রিম পা নিয়ে বিচারের প্রহর গুনছেন মহানগর আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি চন্দন শীল ও যুবলীগ কর্মী রতন দাস।
শক্তিশালী সেই বোমা হামলায় নিহত হন শহর ছাত্রলীগের সভাপতি সাইদুল হাসান বাপ্পী, সরকারি তোলারাম কলেজের ছাত্র-ছাত্রী সংসদের জিএস আক্তার হোসেন, সঙ্গীত শিল্পী মোশারফ হোসেন মশু নজরুল ইসলাম বাচ্চু, ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন ভাসানী, নারায়ণগঞ্জ সদর থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এবিএম নজরুল ইসলাম,
সেচ্ছাসেবকলীগ নেতা সাইদুর রহমান সবুজ মোল্লা, মহিলা আওয়ামীলীগ নেত্রী পলি বেগম, ছাত্রলীগ কর্মী স্বপন দাস, কবি শওকত হোসেন মোক্তার, পান দোকানদার হালিমা বেগম, সিদ্ধিরগঞ্জ ওয়ার্ড মেম্বার রাজিয়া বেগম, যুবলীগ কর্মী সিদু রাম বিশ্বাস, আব্দুস সাত্তার, আবু হানিফ, এনায়েতুল্লাহ স্বপন, আবদুল আলীম, শুক্কুর আলী ও স্বপন রায়। আরও একজন মহিলা নিহত হন এখনো যার পরিচয় মেলেনি।
২০০১ সালের ১৬ জুন এ ঘটনায় পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদাক এড. খোকন সাহা। ২০০৩ সালের এপ্রিল মাসে বিএনপি সরকারের আমলে মামলা দুইটির আসামীদেরকে অব্যহতি দিয়ে চুড়ান্ত রিপোর্ট দেওয়া হয়।
পরে আবার আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় এলে ২০০৯ সালের ২রা জুন সিআইডির আবেদনের প্রেক্ষিতে তৎকালীন নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করে সুষ্ঠু তদন্ত করার আদেশ দেয়। সেই থেকে অভিযোগ পত্র দাখিলের পরও নানা আইনি জটিলতায় বিচার কাজ বিলম্বিত হচ্ছে।