নারায়ণগঞ্জ বাণী২৪ঃ নারায়ণগঞ্জে করোনা সংক্রমনের তিন মাস পেরিয়েছে। তবুও করোনার সংক্রমন নিয়ন্ত্রন করা যায়নি নারায়ণগঞ্জে। বরং করোনা আক্রান্তের মাত্রা বাড়ছে দিন দিন আরও ভয়াবহ আকারে। গত ৮ মার্চ নারায়ণগঞ্জে প্রথম করোনা রোগী সনাক্ত হয়।
এরপর থেকেই প্রথম দিক থেকে করোনায় আক্রান্তের একটু ধীর গতিতে পরে কিছুদিন যেতেই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকে অস্বাভাবিক হারে। এরই মধ্যে নরায়ণগঞ্জকে রেড জোন ঘোষণা করেছে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর । এ জেলাকে বিশেষ লকডাউনের আওতায় নেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে জেলায় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছে সবচেয়ে বেশি। গত ৮ মার্চ থেকে শুরু করে জেলায় ৯ জুন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছে মোট ৩ হাজার ৭০৫ জন জন। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন এলাকাতেই আক্রান্ত হয়েছে মোট ১ হাজার ৩৪৬ জন। আর বাকি ৫ টি উপজেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ২ হাজার ৩৫৯ জন। গত তিন মাসে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় করোনায় করোনায় আক্রান্ত হযে মুত্যু হয়েছে ৯০ জনের। তাদের মধ্যে শুধু সিটি কর্পোরেশন এলাকাতেই মুত্যু হয়েছে ৫৩ জনের।
করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা। গত তিন মাসে এ উপজেলাায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছে মোট ১ হাজার ৭ জন। আক্রান্তদের মধ্যে এ পর্যন্ত মৃত্যু বরন করেছে মোট ১৯ জন। জপ্রথম দিকে বেশির ভাগ গ্রাম অধ্যোশিত উপজেলাগুলোতে করোনায় সংক্রমন খুব একটা পরিলক্ষিত না হলেও হঠাৎ করে রুপগঞ্জ, বন্দর আড়াইহাজার ও সোনারগাঁ উপজেলায় করোনার প্রকোপ বাড়তে থাকে।
আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় অবস্থানে আছে রুপগঞ্জ উপজেলা। রুপগঞ্জ উপজেরায় গত তিন মাসে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে মোট ৬১৮ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যু হযেছে ২ জনের। তারপর ধারাবাহিক ভাবে করোনায় আক্রান্তের দিকে তাকালে ধেখা যায় গত তিন মাসে আড়াইহাজারে আক্রান্ত হয়েছে ৩১৭ জন,মুত্যু হয়েছে ২ জনের। সোনারগাঁয়ে আক্রান্ত হয়েছে ৩০৭ জন, মুত্যু হয়েছে ১২ জনের। বন্দর উপজেলায় (৫টি ইউনিয়নে) আক্রান্ত হয়েছে ১১০ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২ জনের।
নারায়নগঞ্জে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে জেলায় লকডাউন ঘোষণা করা হলেও গত ৩১ মে শিথিল করা হয়েছে। তবে সরকারি নির্দেশনায় এবার তিনটি জোনে ভাগ করে করোনা বিশেষ লকডাউনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে পুরো জেলাকে। এরই মধ্যে কারোনার রেডজোন হিসেবে নারায়ণগঞ্জকে ঘোষণা দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়।
এরই ধারাবাহিকতায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত এলাকায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিশেষ লকডাউনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন। এরই মধ্যে জেলার সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত সিটি কর্পোরেশনের তিনটি এলাকা জামতলা, আমলাপাড়া ও রুপায়ন সিটি রেড জোনের আওতায় নিয়ে বিশেষ লকডাউন ঘোষণা করেছে করে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে এবারের লকডাউনে থাকবে আগের চেয়ে কড়াকড়ি। এবারে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া লকডাউন এলাকা থেকে কেউ বাইরে বের হরে পারবে না।পর্যায়ক্রমে জেলার যেসকল এলাকায় বেশি আক্রান্ত সেসকল এলাকাকে বিশেষ লকডাউনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
এরই মধ্যে এসব এলাকায় লকডাউন নিশ্চিত করতে ৫০ জন পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে বলে গন মাধ্যমকে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম। এভাবে বিভন্ন এলাকায় লকডাউন কার্যকর করতে তিনি স্থানীয় জনপ্রতিধিদের সহযোগীতা কামনা করেছেন।
করোনার আক্রমনের গতি বাড়ার সাথে সাথে জেলাপ্রশাসনের পক্ষ থেকেও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রকার পদক্ষেপ গ্রহন করা হলেও মানুষের মাঝে এখনও সবেতনতা বোধ জন্ম না নেওয়ায় করোনার ব্যাপক বিস্তার ঘটছে বলে ধারনা সচেতন মহলের।
নারায়ণগঞ্জে আবারো লকডাউন করা হলো যেসব এলাকা- জানত ক্লিক করুন
আরও পড়ুন নিচে ক্লিক করে..
-
নারায়ণগঞ্জে অস্বাভাবিক করোনার সংক্রমণ-১ দিনে আক্রান্ত ১১১-১ জনের মুত্যু
- করোনায় আক্রান্ত সিএমপি কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান