রেদোয়ান ইসলামঃ বাগেরহাট জেলার চিতলামারী উপজেলার শিশুরা পিছিয়ে নেই ৷ পড়ালেখার বিষয়ে অভিবাবকদের চাইতে তাদের নিজেদের গুরুত্ব বেশি রয়েছে। হ্যা, আমি বলছিলাম বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ এক জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের কিছু মেয়ে শিশুর কথা। বাড়িতে নেই বিদ্যুতের লাইন, গ্রামে নেই সুবিধাজনক পরিবহন, এরপরেও এরা পিছিয়ে নেই, পড়াশোনা করে মানুষের মতো মানুষ যে হতে হবে।
আমরা জানি বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী ১৮ বছরের নিচে সকল মানবসন্তান “শিশু”। এই প্রত্যন্ত অঞ্চলের অভিবাবকরা মনে করতো তারাই হচ্ছে এই দেশের সব চাইতে পিছিয়ে পরা মানুষ । সে কারনে তারা তাদের সন্তানদের নিয়মিত বিদ্যালয়ে পাঠাতো না। কিন্তু তাদের মেয়ে শিশুদের ধারনা শিক্ষার অধিকার সবার আছে, হ্যা শিক্ষার অধিকার সকলের ই আছে। সেই ধারনা থেকেই তারা তাদের নিজের অধিকার এর কথা সকলের মাঝে তুলে ধরতে শুরু করলো।
বন্যা, ঝর্না, সুবর্না (ছদ্মনাম) তিন বান্ধবী মিলে সিদ্ধান্ত নেয়, বিদ্যালয়ে যাবে সাইকেল চালিয়ে। বাবা-মা প্রথমে দিতে নারাজ হলেও এরপর তারা তাদের অধিকার এর কথা তুলে ধরলে তিনজনের বাবা-মা তাদেরকে পরিবেশ বান্ধব সাইকেল কিনে দেয়।
এরপর থেকে শুরু হয় গ্রামের মানুষের সমালোচনা, মেয়ে মানুষ হয়ে সাইকেল চালাবো যেন এক পাপের কাজ হয়ে দাড়ালো, গ্রামের অনেকেই বলতে লাগলো ” মাইয়া মানুষ আবার সাইকেল চালায় নাকি”, অনেকের ধারনা মেয়ে শিশুরা শুধু বাড়িতে বসে কাজ করবে, পড়ালেখা স্কুল-কলেজ তাদের জন্য না।
তবে, বন্যার ধারনা তাদের থেকে আরো অনেক মেয়েরা শিখবে, অনুপ্রাণিত হবে। তাই তারা তাদের অধিকার নিয়ে আবারো সবার মাঝে বলতে লাগলো, বিদ্যালয়ে তাদের বান্ধবীদের সাথেও অধিকার নিয়ে কথা বলা শুরু করলো। তার ধারনা এভাবে করে তারা তাদের গ্রাম কে পরিবর্তন করতে পারবে।
এদের মতো সচেতন শিশুদের কারনে আজ গ্রামের কিছু ভুল প্রথা দূর হয়ে আমাদের সমাজের শিশুরা আর পিছিয়ে থাকছে না। শিশুদের অধিকার রয়েছে কথা বলার, অধিকার রয়েছে নিজের ইচ্ছে পোষন করে কিছু কাজ করার।
ছবিঃ রেদোয়ান ইসলাম
লোকেশনঃ চিতলমারী, বাগেরহাট, খুলনা।