আবু হোরায়রা ফাহিম : লেখক মানে জাদুকর। কলম নামক জাদুর কাঠির ছোঁয়ায় তারা বদলে দেয় মানুষের ভাবনার জগৎটাকে।অাজ জানব বাংলাদেশের সেরা পাঁচজন লেখকের গল্প-ঃ
১।মোতাহের হোসেন চৌধুরী:নোয়াখালী জেলায় জন্ম নেয়া এই মেধাবী লেখক শৈশব থেকেই নানা ক্ষেত্রে নিজের মেধার স্বাক্ষর রাখতে থাকেন।পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পাশ করে বাংলা সাহিত্যে অধ্যাপনা শুরু করেন।’সংস্কৃতি কথা’ নামক প্রবন্ধ তাকে সর্বোচ্চ খ্যাতি এনে দেয়।এটি বাংলা সাহিত্যের মূল্যবান উপাদানে রূপ নেয়।তার লেখায় তিনি ব্যক্তিত্ব,চিন্তা অার মননশীলতা দেখিয়েছেন,যা অাজও মানুষের অনুকরণীয় হয়ে অাছে।
২।সৈয়দ শামসুল হক:তাকে বলা হয় সব্যসাচী লেখক।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পর তিনিই একমাত্র লেখক যিনি বিবিধ সাহিত্য রচনা করেছেন।সাহিত্যের প্রায় সকল শাখাতেই রয়েছে তার অনন্য অবদান।তার অন্যতম সৃষ্টিকর্ম ‘পায়ের অাওয়াজ পাওয়া যায়’,’নুরুলদীনের সারাজীবন’।অার তার লেখা গান’হায়রে মানুষ রঙের মানুষ’এর কথা কে না জানে!চিরউজ্জল এই মানুষটি ২০১৬ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
৩।রকিব হাসান:তিন গোয়েন্দা সিরিজের জনক।পাঠকদের শৈশবের বড় একটা অংশই কেটেছে ‘তিন গোয়েন্দা’ পড়ে।এছাড়া তিনি নানা জনপ্রিয় বিদেশি বই অনুবাদ করেন।’টারজান’,’অ্যারাবিয়ান নাইটস’সহ অসংখ্য বই অনুবাদ করেন।তবে তার বহুল জনপ্রিয় ‘তিন গোয়েন্দা’ সিরিজটি ‘দ্যা থ্রি ইনভেস্টিগেটর’ সিরিজের অনুবাদ।মূলত এর মাধ্যমেই তিনি খ্যাতি অর্জন করেন।তার যথাযথ উদ্যোগের মধ্য দিয়ে তিনি অনুবাদ সাহিত্যকে এক অনন্য রূপদান করেন।তার লেখা বাঙালিকে বিশ্বসাহিত্যের স্বাদ উপলদ্ধি করার সুযোগ করে দেয়।
৪। জহির রায়হান:মেধাবী এই লেখক একাধারে ছিলেন চলচ্চিত্র পরিচালক,সংগীত পরিচালক,প্রযোজক ও সুরকার।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতক করার পর সাহিত্য ও সংস্কৃতির উন্নয়নে মনোনিবেশ করেন।তার অন্যতম জনপ্রিয় চলচ্চিত্র ‘জীবন থেকে নেয়া’,’সঙ্গম’।তবে তিনি মুক্তিযুদ্ধের উপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘স্টপ জোনোসিড’ এর জন্য বিশেষভাবে বিখ্যাত।মুক্তিযুদ্ধের পর এককালরাত্রিতে তাকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়।তারপর থেকে তার কোনো সংবাদ পাওয়া যায় নি।তবে ধারণা করা হয়,তাকে হত্যা করা হয়।
৫।হুমায়ূন অাহমেদ:বাংলা সাহিত্যের রাজপুত্র বলা হয় তাকে।সৃষ্টি করেছেন হিমু,মিসির অালী,শুভ্র,বাকের ভাইয়ের মত অনন্য সব চরিত্র।বাংলাদেশে তিনি সবচেয়ে বেশি পঠিত লেখক।রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক মানুষটি একাধারে ছিলেন নাট্যকার,চলচ্চিত্রকার,কথাসাহিত্যিক।তার সকল সৃষ্টিকে সৌন্দর্যকে নানা বিশেষণে বিশেষিত করা হয়েছে।জনপ্রিয়তায় তিনি ছাড়িয়ে গেছেন যেকোন বাংলাদেশী লেখককে।তার কথায় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন,’যদি কোন লোক বই বিক্রি করে বিপুল অর্থ উপার্জন করতে পারে,তবে সেটা হুমায়ূন অাহমেদ।’অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী মানুষটি ভ্রুণ ক্যান্সারে অাক্রান্ত হয়ে ইহধাম ত্যাগ করেন।