নারায়ণগঞ্জে আলোচিত ৭ খুন

নারায়ণগঞ্জে আলোচিত ৭ খুন মামলার ৬ বছর-এখনো কার্যকর হয়নি মৃত্যুদন্ড

নারায়ণগঞ্জ বাণী২৪ঃ নারায়ণগঞ্জের আলোচিত নৃশংস হত্যাকান্ড ৭ খুন মামলার ৬ বছর পার হচ্ছে ২৭ এপ্রিল। এখনো কার্যকর হয়নি মামলার মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত কোন আসামীর দন্ড। প্রতি বছর ২৭ এপ্রিল এলেই নারায়ণগঞ্জের এই হত্যাকান্ড নিয়ে শুরু হয় নানা আলোচনা সমালোচনা।

আলোচিত এই হত্যাকান্ডের মামলা দায়েরের তিন বছর পর ২০১৭ সনের ৯ জানুয়ারি ২৬ আসামীর বিরুদ্ধে মৃত্যুদন্ড এবং বাকি ৯ জনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ডের আদেশ দেন তৎকালীন নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত সৈয়দ এনায়েত হোসেন।

পরে আসামীরা উচ্চ আদালতে অপীল করলে র‌্যাব-১১ এর সাবেক সিও (বরখাস্ত) তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, এবং সাবেক কাউন্সিলর নুর হোসেন সহ ১৫ আসামীর মৃত্যুদন্ড বহাল রেখে বাকি ১১ জনের জাবজ্জীবন কারা দন্ডের আদেশ সহ অন্য আসামীদের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড বহাল রাখে হাইকোর্ট।

এর আগে ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে অপহৃত হন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল্ ইসলাম , সিনিয়র আইনজীবি এড. চন্দন সরকার সহ ৭ জন। অপহরনের তিন দিন পর ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদীতে একে একে ভেসে উঠে হাত-পা বাধা অবস্থায় ৭ জনের লাশ।

তখন তৎকালিন কাউন্সিলর নুর হোসেন সহ ৬ জনকে আসামী করে ফতুল্লা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি। লাশ উদ্ধারের পর অজ্ঞাত আসামী করে আরও একটি হত্যা মামলা দায়ের করে এড. চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল।

এক পর্যায়ে আলোচিত এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠে র‌্যাবের কয়েক জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। পরে ঐ বছরের ১৬ ও ১৭ মে হাইকোর্টের নির্দেশে গ্রেফতার করা হয় র‌্যাব-১১ এর সাবেক সিও তারেক সাইদ মোহাম্মদ সহ র‌্যাবের তিন কর্মকর্তাকে। পরে একে একে গ্রেফতার হয় র‌্যাব কর্মকর্তা সহ আরও ২২ জন।

গ্রেফতারকৃত র‌্যাব-১১ এর সাবেক সিও তারেক সাঈদ মোহাম্মদ সহ ২২ জন এবং পলাতক আসামী নুর হোরসন সহ ১৫ জন মোট ৩৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্র দাখিল করে তদন্তকারি কর্মকর্তা। আর ভারতে পলিয়ে গেলেও ২০১৫ সালের ১২ নভেম্বর নুর হোসেনকে গ্রেফতার করে যশোর সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে হস্তান্তর করে কলকাতা পুলিশ।

তিন বছর বিচার কার্য পরিচালনা করার পর ২৬ জনের বিরুদ্ধে ফাঁসী এবং অন্য আসামীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দেয় নারয়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত।

পরে হাইকোটে আপীল করা হলে হাইকোর্ট ১৫ আসামীর মৃত্যুদন্ড বহাল রাখে ।

এদিকে হত্যাকান্ডের ৬ বছর এবং আলোচিত এই হত্যাকান্ড মামলার রায় ঘোষণার তিন বছর পুর্ণ হলেও আইনের ফাক ফোকরে বিলম্বিত হচ্ছে রায় কার্যকর প্রক্রিয়া।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*