নারায়ণগঞ্জ বাণী২৪ঃ লকডাউনে মার্কেট খোলা থাকলেও গনপরিবহন বন্ধ থাকায় একেবারেই আয় রোজগার নেই নারায়ণগঞ্জ বন্দরে ৫ শতাধিক ঋৃষি মুচি পরিবারের। কর্মহীন এ ৫শ মুচি পরিবারের মানবেতর জীবন ।
দৈনিক আয় রোজগারে তাদের চলে সংসার। উপজেলার পুুুুরান বন্দর ত্রিবিনী, জহরপুর, শ্যামপুর ও সাবদীসহ ৪টি গ্রামে প্রায় হাজারো মুচি পরিবারের বসবাস।
তারা গনপরিবহনে প্রতিদিন ঢাকা রাজধানী, নারায়ণগঞ্জ শহরসহ জেলার আশপাশে এলাকা ও হাট-বাজারে জুতা মেরামত কাজ করেন। এতেই চলতো সংসার।
করোনায় ঘরবন্দি এই পেশার মানুষ সরকারি, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় ত্রাণ সামগ্রী পেয়ে এখন খেয়ে বেচে আছেন প্রায় ৫শতাধিক পরিবার। সনতন হিন্দু ধর্মাবলম্বিদের ধর্মীয় রীতি মেনে চলেন তারা।
খোজ নিয়ে জানাগেছে, উপজেলার বন্দর ইউপির ত্রিবিনী খালের তীরে (পুরান বন্দর) এলাকায় ঘনবসতি ৫ শতাধিক ঋৃষি মুচি পরিবার বসবাস। এখানকার ঋৃষি পরিবারের অনেকেই বাপ-দাদার আদি মুচি পেশা ছেড়ে জীবিকা নির্বাহে মাসিক বেতনে শিল্পকল কারখানাসহ অন্যান্য পেশা বেচে নিয়েছেন। মুচি পেশার পরিবারগুলোর মধ্যে চলছে দুরবস্থা।
নিখিল চন্দ্র ঋৃষি জানান, প্রথম সরকারি ত্রাণ পৌঁছে দেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি। এর পর কয়েক দফা ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছেন এমপি সেলিম ওসমান। যারা দিন আনে দিনে খায় ওই পরিবারের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছে।
গনপরিবহন বন্ধ থাকায় কর্মহীন বহু পরিবার অর্থের অভাবে দৈনন্দিন নিত্যপ্রয়োজনীয় তরিতরকারি, একটি ট্যাবলেট কেনার সামথ্য নেই।
শ্যামপুর গ্রামের গীতা রানী দাস জানান, ৫ জনের সংসার চলে ৩ জনের কাজে। লকডাউনে ৩ জনেই ঘরবন্দি। শ্যামগ্রামে প্রায় ১শ জন মুচি জন কর্মহীন। ধামগড় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাসুম আহম্মেদ ত্রাণ না পৌঁছালে ঘরে রান্না হইতো না।
ত্রাণে চাল, ডাল তেল, আলু ও লবন পেয়ে থাকলেও তরিতরকারি কেনার টাকা নেই। আলুর ভর্তা আর ডাল দিয়ে ভাত খেয়ে বেচে আছি।
জহরপুর গ্রামের বাসিন্দা সতেন চন্দ্র দাস জানান, এ গ্রামে দেড় শ পরিবারের বসবাস। কর্মহীন হতদরিদ্র ৩০টি পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা দিচ্ছেন মুচাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন। ত্রাণেই বেছে আছে তারা।
সাবদী গ্রামের সুবাস চন্দ্র ও অমল চন্দ্র জানান, নারায়ণগঞ্জ কালিবাজার জুতা মেরাতমের কাজ করি। লকডাউনে ঘরবন্ধি। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে আমাদের। ঈদের আগে কাজের চাপ বেশী।
জীবন বাচাতে কাজে গিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ বসতে দেয় না। লাঠি পেটা করে। ত্রাণ সহায়তা না পেলে না খেয়ে মরতে হবে।
বন্দর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শুল্কা সরকার জানান, মুচি পরিবারগুলো আলাদা ভাবে সহায়তা করার সুযোগ নেই। কারণ সকল শ্রেণীর পেশার কর্মহীন পরিবারের মাঝে সরকারি ভাবে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সমাজের ভিত্তশালীরাও সহায়তা করছে।
ইতি মধ্যে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের এমপি সেলিম ওসমান মহোদয়ের নিজস্ব তহবিল থেকে আর্থিক সহায়তা সহ খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন। করোনা মহামারিতে বন্দর উপজেলার কোনো পরিবার না খেয়ে থাকবে না। করোনা মোকাবেলায় উপজেলাবাসীর সঙ্গে আছি এবং থাকবো।