নারায়ণগঞ্জ বাণী২৪ঃ নারায়ণগঞ্জে দিন দিন বেড়েই চলছে করোনা সংক্রমনের সংখ্যা। বাড়ছে করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে মৃতের সংখ্যাও। করোনার সংক্রমন এখন জেলা শহর থেকে ক্রমে ছড়িয়ে পড়ছে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলার গ্রামাঞ্চলেও।
নারায়ণগঞ্জে করোনা এখন আর গুচ্ছ আকারে নেই। ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন ভাবে মানুষের দেহে। করোনায় জেলা শহরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ঝুকি পুর্ণ হওয়ায় পুরো জেলা লকডাউন করেছিল প্রশাসন। কিন্তু সরকারি নির্দেশনায় গার্মেন্টস কারখানা দোকান পাট খুলে দেওয়ায় এর ঝুঁকি আরও বাড়ছে দিন দিন।
গার্মেন্টস খুলে দেওয়ায় বেড়েছে জনসমাগম ও জটলাবেধে চলাচল। একদিকে গার্মেন্টস কারখানা খুলে দেওয়া অপর দিকে গন পরিবহন বন্ধ দুইয়ে মিলে গার্মেন্টস কর্মীদের জটলা বেঁধে অটোতে করে যাতায়াত এবং নদী ঘাটে ৫০/৬০ জনের জটলা বেঁধে ট্রলারে করে নদী পাড় হওয়া ঝুঁকি বড়িয়েছে অনেকটা।
ঈদকে কেন্দ্র করে খুলে দেওয়া হয়েছে শপিংমল । প্রশাসনের বিভিন্ন প্রকার পদক্ষেপ গ্রহন করার পরও মানুষ মানছেনা স্বাস্থ্যবিধি, বজায় রাখছেনা সামাজিক দুরত্ব।
এরই মধ্যে ঈদের ছুটিতে গন পরিবহন বন্ধ রেখে নিজস্ব ব্যাবস্থায় বাড়িতে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এতে করে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে নারায়নগঞ্জে আসা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মস্থল ছেড়ে নারায়ণগঞ্জের বিপুুল জনগোষ্ঠির একটি অংশ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাড়ি জমাচ্ছে। তারা যাতায়াতের পথে জটলা হচ্ছে বিভিন্ন স্থানে। ঈদ পরবর্তী সময়ে নারায়ণগঞ্জে করোনা পরিস্থিতিতে এর একটা প্রভাব তো পড়বেই।
গত ৮ মার্চ নারায়ণগঞ্জে প্রথম করোনা রোগী সনাক্ত হলেও গত ৩০ মার্চ বন্দরের রসুলবাগ এলাকায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে এক বয়স্ক নারীর মুত্যু হলে আলোচনায় আসে নারায়ণগঞ্জ। সেই থেকেই শুরু হয় সময় ও আক্রান্ত আর মৃতের সংখ্যা গননা।
শুরু হয় নারায়ণগঞ্জে করোনা ভাইরাসের সংক্রমন ঠেকাতে নানা উদ্যোগ ও বাস্তবায়ন। কিন্তু কোন ক্রমেই ঠেকানো যাচ্ছেনা করোনার আক্রমন। একের পর এক বাড়ছে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু, সাথে বহুগুন হারে বাড়ছে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যাও। শহরের বাইরেও বিভিন্ন উপজেলায় ছড়িয়ে পড়ছে করোনার সংক্রমন।
নারায়ণগঞ্জে ২২ মে শুক্রবার পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছে মোট ১ হাজার ৯১৭ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যু বরণ করেছেন ৬৯ জন এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৬১৬ জন।
এভাবে বাড়তে থাকলে করোনা আক্রান্তের দিক থেকে নারায়ণগঞ্জে হয়ে উঠতে পারে অস্বাভাবিক ভয়ংকর। সরকারি নির্দেশনা না মানলে তার পরিনতি হতে পারে আরও ভয়ংকর ।
বিভিন্ন সংস্থা বলছে করোনার এই পরিস্থিতি খুব সহজে শেষ হবেনা। তাই তারা সচেতনতাকে বড় হাতিয়ার হিসেবে দেখছেন। তাই বারবার স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার আহবান জানাচ্ছেন।
তাই সবাইকে নিজেদের প্রয়োজনেই সরকারি প্রশাসনের নির্দেশনা মেনে খুব বেশি প্রয়োজন না হলে ঘরে থাকা এবং স্বাস্থ্য বিভাগের নিয়মগুলো মেনে চলাই এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত।
অন্যথায় নারায়ণগঞ্জের করোনার এই ভয়াবহতা দিন দিন বাড়তেই থাকবে। কবে শেষ কেউ বলতে পারবেনা।