নারায়ণগঞ্জ বাণী২৪ঃ করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে দেশের সবচেয়ে ঝুঁকিপুর্ণ জেলা নারায়ণগঞ্জ। শুরু থেকেই নারায়ণগঞ্জে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করা হলেও কমানো যাচ্ছেনা
জেলায় করোনা সংক্রমনের হার। অবশেষে জেলায় লকডাউন ঘোষণা করা হলেও করোনা প্রতিরোধে তেমন কোন সফলতা আসেনি।
এরই মধ্যে দেশের অর্থনীতির কথা চিন্তা করে সারাদেশের মত নারায়ণগঞ্জ জেলায়ও সকল শিল্প প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে। গত ১লা জুন থেকে দুই মাসেরও বেশি সময় পর স্বাস্থ্য বিধি মেনে গনপরিবহন চালানোর নির্দেশ দিয়েছে সরকার। চলমান এ সংকট মোকাবেলায় সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন ভাবে কাজ করে যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন। সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা সহ স্বাস্থ্য বিধি মানতে জনসচেতনতায় নানামুখী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে জেলা প্রশাসন। তবুও মানুষের মধ্যে রয়েছে গোড়ামী ও স্বাস্থ্য বিধি না মানার প্রবনতা।
নারায়ণগঞ্জে সবচেয়ে বেশি জনসমাগম হচ্ছে পোশাক কারখানাকে ঘিরে। পোশাক কারখানাগুলো খুলে দেওয়ায় প্রতিদিন শীতলক্ষ্যা নদী দিয়ে হাজার হাজার পোশাক শ্রমিক সহ নৌকা বা ট্রলারে পারাপার হচ্ছে বিভিন্ন পেশার মানুষ। কিন্তু তাদের মধ্যে সামাজিক দুরত্ব মানা হচ্ছেনা। বিশেষ করে সকাল ৭টা থেকে ৯ টা পর্যন্ত দেখা যায় নৌকা ও ট্রলারে গাদাগাদি করে পারাপার হচ্ছে মানুষ।
এদিকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে গনপরিবহন চালানোর কথা থাকলেও জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ঢাকায় চলাচলরত কাউন্টার বাস সার্ভিসগুলো স্বাস্থ্য বিধি মেনে পরিবহন চালালেও লোকাল বাসগুলোতে দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র। সেগুলোতে মানা হচ্ছেনা স্বাস্থ্য বিধি। তাছাড়া সিএজি, অটোরিক্সায় মানুষ চলাচল করছে গাদাগাদি হয়ে। এতে করে মানুষ একজনের সাথে আরেকজন মিশে চলাচল করার কারনে করোনার ঝুঁকি বাড়ছে দিন দিন।
সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা এবং স্বাস্থ্য বিধি নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিচালিত হচ্ছে মোবাইল কোর্ট। প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন এলাকায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে বিভিন্ন ভাবে করা হচ্ছে আর্থিক জরিমানা। তবুও মানুষের মাঝে বোধশক্তি উদয় হচ্ছেনা। ফলে জেলায় হু হু করে বাড়ছে প্রতিদিন করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, ৪ জুন পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৭১৭ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হযেছে। এ নিয়ে জেলায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে মোট ১৪ হাজার ৮০৬ জনের। এ পর্যন্ত জেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাড়িয়েছে ৩ হাজার ২৯১ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যু বরণ করেছে মোট ৮৫ জন এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে মোট ৮৪২ জন।
এদের মধ্যে জুনের শুরু থেকে এ পর্যন্ত প্রতিদিন করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে শতাধিক হারে। লকডাউন শিথিল করার সাথে সাথে যেন করোনা ও জেকে বসেছে নারায়ণগঞ্জে। চলছে গনপরিবহন, খুলেছে শিল্প প্রতিষ্ঠান তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে করোনার ভয়াবহ সংক্রমন।